শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১২

বিদেশ যাওয়ার সহজ উপায়…



shafik rehmanস্থান : ইমিগ্রেশন কাউন্টার ও ডিপারচার লাউঞ্জ, বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, ত্রিশাল। এবং প্রধানমন্ত্রীর অফিস।
কাল : মে ২০১৪-র কোনো এক সকাল ন’টা।
চরিত্র : সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও তার স্বামী এবং সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এ কে খন্দকার, ইমিগ্রেশন ক্লার্ক, ইমিগ্রেশন অফিসার, এমিরেটস এয়ারলাইন্স এয়ারপোর্ট ম্যানেজার, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার মন্ত্রী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী।

দৃশ্য : ১
ইমিগ্রেশন কাউন্টারের সামনে কিউ-তে দাড়িয়ে আছেন যথাক্রমে, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও তার স্বামী এবং সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এ কে খন্দকার।
ইমিগ্রেশন ক্লার্ক (সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনির পাসপোর্টের কয়েকটি পাতা উলটিয়ে দেখলেন। তার সামনে রাখা কমপিউটার স্কৃনে কিছু নাম দেখলেন। তারপর ডা. দীপু মনির দিকে তাকালেন) : এক্সকিউজি মি ম্যাডাম। আপনাকে একটু অপেক্ষা করতে হবে।
ডা. দীপু মনি : কেন? পাসপোর্টে কিছু গোলমাল আছে? অথবা ভিসাতে?
ইমিগ্রেশন ক্লার্ক (প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে নিচু গলায় ফোন করলেন তার ওপরওয়ালাকে) : স্যার। আই নিড ইয়োর হেল্প।
ইমিগ্রেশন অফিসার (ইমিগ্রেশন কাউন্টারে মিনিট খানেকের মধ্যে এসে) : কি হয়েছে?
ইমিগ্রেশন ক্লার্ক : স্যার। (ডা. দীপু মনিকে দেখিয়ে) এই পাসপোর্টটা ওনার।
ইমিগ্রেশন অফিসার (পাসপোর্টটা হাতে নিয়ে, নাম দেখে) : ওহ। আই সি। (তারপর ডা. দীপু মনির প্রতি বিনয়সূচক স্বরে) : ম্যাডাম। আপনি আমার সঙ্গে আসুন। (ডিপারচার লাউঞ্জের খালি চেয়ারগুলো দেখিয়ে) এখানে একটু অপেক্ষা করুন। আমি আসছি।
ডা. দীপু মনি (ইমিগ্রেশন কাউন্টার পেরিয়ে লাউঞ্জে ঢুকে) : কিন্তু আমার পাসপোর্ট?
ইমিগ্রেশন অফিসার : আমার কাছে।
ডা. দীপু মনি (ইমিগ্রেশন ক্লার্ককে দেখিয়ে) : ওখানে তো উনি চেকআউট সিল মারেননি।
ইমিগ্রেশন অফিসার (শান্ত ও বিনয়ী স্বরে) : সব ফর্মালিটিজ কমপ্লিট হলে চেকআউট সিল দেয়া হবে। আপনি দয়া করে এখানে একটু ওয়েইট করুন।
ইমিগ্রেশন অফিসার পাসপোর্ট হাতে নিয়ে গটগট করে চলে গেলেন।
ডা. দীপু মনি তার রিস্টওয়াচে সময় দেখলেন।
ঠিক একইভাবে ইমিগ্রেশন ক্লার্কের ফোন কল পেয়ে সেই অফিসার বারবার কাউন্টারে এলেন। অন্যান্য অপেক্ষমাণদের পাসপোর্ট নিলেন। এবং একে একে তাদের ডা. দীপু মনির পাশের চেয়ারগুলোতে তাদের বসিয়ে আবার গটগট করে হেটে উধাও হয়ে গেলেন।
ডা. দীপু মনির পাশে তার স্বামী এবং সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এ কে খন্দকার। তিনজনই কিছুটা উদ্বিগ্ন মুখে।
সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এ কে খন্দকার (চিন্তিত স্বরে) : আমাদের সবার পাসপোর্ট নিয়ে ওই ইমিগ্রেশন অফিসার কোথায় গেলেন? তাকে তো কোথাও দেখতে পাচ্ছি না।
ডা. দীপু মনি : নিশ্চয়ই ইমিগ্রেশন কনট্রোল রুমে গিয়েছেন তার ওপরওয়ালার সঙ্গে কথা বলতে। (ডা. দীপু মনি তার রিস্টওয়াচ দেখে) এখন সকাল সোয়া ন’টা। আমাদের ফ্লাইট সকাল এগারোটায়। আশা করি এর মধ্যে সব প্রবলেম সলভড হয়ে যাবে।
দৃশ্য : ২
ইমিগ্রেশন লাউঞ্জে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা। ডা. দীপু মনি চেয়ারে বসে। বাকি দু’জন হাটাহাটি করছেন।
ডা. দীপু মনি (রিস্টওয়াচ দেখে) : এখন পৌনে দশটা। আধা ঘণ্টা হয়ে গেল। ওই অফিসারটা কোথায় নিখোজ হয়ে গেল? (উঠে দাড়িয়ে) চলুন। আমরা সবাই ইমিগ্রেশন কনট্রোল রুমে যাই। (এ কে খন্দকারের দিকে তাকিয়ে) ইমিগ্রেশন কনট্রোল রুমটা কোথায়?
এ কে খন্দকার : এই সুবিশাল এয়ারপোর্টে সেই রুমটা যে কোথায় তা আমি জানি না।
ডা. দীপু মনি : বলেন কি? পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা খরচ করে অন্য সব প্রায়রিটির আগে, এমনকি বাংলাদেশ বিমানের জন্য নতুন প্লেন কেনার আগে এই এয়ারপোর্ট বানানোর প্ল্যান যখন করেছিলেন তখন তো নিশ্চয়ই দেখেছিলেন। তখন দেখেননি কোথায় ইমিগ্রেশন কনট্রোল রুম হবে?
এ কে খন্দকার (বিব্রতভাবে) : তখন কি আর জানতাম আজ এভাবে এখানে আটকে যাবো? তখন তো আমাদের প্ল্যান ছিল ২০২১ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার।
ডা. দীপু মনি : ২০২১ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার প্ল্যান কেন করা হয়েছিল? ২০২১-এর পর কি আমরা ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতাম?
এ কে খন্দকার : ওই যে! উনি ফিরে আসছেন কিন্তু ওনার হাতে আমাদের পাসপোর্ট তো দেখছি না।
ইমিগ্রেশন অফিসার (অপেক্ষমাণ যাত্রীদের সামনে এসে) : সরি ম্যাডাম। সরি স্যার। আপনাদের আরো কিছুক্ষণ ওয়েইট করতে হবে।
ডা. দীপু মনি : আমরা আধা ঘণ্টা ওয়েইট করেছি।
ইমিগ্রেশন অফিসার : জানি। কিন্তু আমার কিছু করার নেই। সবই ওপরের নির্দেশ। আপনারা চা-কফি খান। আমি আনিয়ে দিচ্ছি।
ডা. দীপু মনি : চা-কফির দামটা কে দেবে?
ইমিগ্রেশন অফিসার : কেন? আপনারাই দেবেন।
ডা. দীপু মনি : আমরা দেব কেন? আমরা তো চা-কফি খেতে এখানে আসিনি। আমরা সবাই নিউ ইয়র্কে যেতে এখানে এসেছি।
ইমিগ্রেশন অফিসার (হাসি মুখে) : তাহলে দামটা আমিই দিয়ে দেব।
ডা. দীপু মনি (দৃঢ় স্বরে) : না। সেটা হয় না। আপনি কেন আমাদের জন্য আপনার পকেটের টাকা খরচ করবেন? সেটা হয় না। দেখুন আমাদের এখন চা-কফি খাওয়ার কোনো দরকার নেই। প্লেনেই ওরা চা-কফি সার্ভ করবে। আমাদের দরকার পাসপোর্ট এবং বিদেশে যাওয়া।
ইমিগ্রেশন অফিসার (বিনীত ভঙ্গিতে) : অল রাইট ম্যাডাম। আপনারা তাহলে আরেকটু অপেক্ষা করুন।
ইমিগ্রেশন অফিসার আবার গটগট করে অদৃশ্য হয়ে গেলেন।
দৃশ্য : ৩
অপেক্ষমান যাত্রীরা সবাই উদ্বিগ্ন চেহারায়।
ডা. দীপু মনি (রিস্টওয়াচ দেখে) : এখন সোয়া দশটা। ঠিক এক ঘণ্টা হয়ে গেল আমরা অপেক্ষা করছি। আর পয়তাল্লিশ মিনিট পরে আমাদের ফ্লাইট।
এমিরেটস এয়ারলাইন্সের এয়ারপোর্ট ম্যানেজার সশব্যস্ত হয়ে এলেন।
এমিরেটস ম্যানেজার : আপনারা এখানে বসে আছেন কেন? সব প্যাসেঞ্জার তো সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স করে এখন বোর্ডিং লাউঞ্জে বসে আছেন। শুধু আপনারা তিন জন ছাড়া। প্লিজ, বোর্ডিং গেইট নাম্বার থৃতে আপনারা সবাই আসুন। সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স করিয়ে নিন। তা নাহলে আমাদের ফ্লাইট টাইমলি ছাড়তে পারবো না। প্লিজ।
ডা. দীপু মনি : আমরা তো যেতেই চাই। কিন্তু আমাদের কারো কাছে আমাদের পাসপোর্ট নেই। ইমিগ্রেশন অফিসার আমাদের সবার পাসপোর্ট নিয়ে গিয়েছেন।
এমিরেটস ম্যানেজার (সবিস্ময়ে) : সে কি! আপনারা তো সবাই মানীগুণী লোক! আপনাদের সবার লাগেজ তো প্লেনে উঠে গেছে। আপনাদের না নিয়ে তো প্লেন এখন টেক অফ করতে পারবে না। আর প্লেন দেরি করে ছাড়লে আপনারা দুবাইয়ে কানেকটিং ফ্লাইট মিস করবেন।
ডা. দীপু মনি : তাহলে দয়া করে আপনি ইমিগ্রেশন কনট্রোল রুমে যান। সেখানে আপনার সমস্যার কথা বলুন।
এমিরেটস ম্যানেজার : নিশ্চয়ই। আমি এখনি যাচ্ছি।
এমিরেটস ম্যানেজার দ্রুত চলে গেলেন।
এ কে খন্দকার (চিন্তিত মুখে) : সম্ভবত নতুন সরকার এসেই একটা ব্ল্যাক লিস্ট তৈরি করেছে। যারা দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন না তেমন ব্যক্তিদের নাম ওই লিস্টে আছে।
ডা. দীপু মনি : সেটা হতে পারে। না-ও হতে পারে। এত তাড়াতাড়ি নতুন সরকার একটা ব্ল্যাক লিস্ট বানিয়ে ফেললো! আমাদের টাইমে কি হয়েছিল?
এ কে খন্দকার : আমাদের টাইমে দৈনিক সমকাল পত্রিকায় ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯-এ ‘৬২ ভিআইপির দেশত্যাগ নিষেধ’ শীর্ষক রিপোর্টে প্রথম ব্ল্যাক লিস্টের সংবাদ বেরিয়েছিল। এই রিপোর্টের দ্বিতীয় শিরোনাম ছিল ‘বিমানবন্দরসহ সব ইমিগ্রেশনে তালিকা গেছে, কোনো আওয়ামী লীগ নেতার নাম নেই।’ এর পর দিন দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায় ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯-এ ‘যারা বিদেশ পাড়ি দিতে পারবেন না’ শীর্ষক রিপোর্টে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দ্বিতীয় সংবাদটি বেরিয়েছিল। তাতে ৪০ জন ভিআইপির নাম ছিল। অর্থাৎ আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার দেড় মাস পরেই এসব লিস্টের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। তারপর দৈনিক সমকাল-এ ২৭ মার্চ ২০১০-এ সংবাদ বেরিয়েছিল ‘বিমানবন্দরে ২১ জনের তালিকা। বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা।’ আর তারপর দৈনিক আমার দেশ-এ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০-এ প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘বিরোধী দলের নেতা এমপি পেশাজীবীকে বিদেশ যেতে বাধা। ৭০ জনের তালিকা বিমানবন্দর ও ইমিগ্রেশন শাখায়।’
ডা. দীপু মনি : হুম। আমাদের টাইমে দেড় মাস পরে ব্ল্যাক লিস্টের খবর বেরিয়েছিল। আর এই নতুন সরকার… এক মাস পরেই…। আমাদের খুব বড় ভুল হয়েছিল। মাত্র ৭০ জনের ব্ল্যাক লিস্ট করা হয়েছিল। ডিসেম্বর ২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপি যাদের ভোট পেয়েছিল সেই প্রায় দুই কোটি ত্রিশ লক্ষ ভোটারদেরই যদি ব্ল্যাক লিস্ট করা হতো এবং তাদের সবাইকে যদি নিষ্ক্রিয় রাখা যেত, বিদেশ ভ্রমণে বাধা দেয়া যেত, তাহলে বিএনপি ২০১৪-এর নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারতো না। ভুল হয়ে গেছে। ভুল হয়ে গেছে। ভুল হয়ে গেছে। (একটু চুপ থেকে) আরেকটা ভুল হয়েছে আপনার প্ল্যানিংয়ে এই নতুন এয়ারপোর্টে কোনো বিএলপি ওয়েটিং রুম বানাননি।
এ কে খন্দকার (জিজ্ঞাসু চোখে) : বিএলপি ওয়েটিং রুম?
ডা. দীপু মনি : বিএলপি মানে ব্ল্যাক লিস্টেড পারসন্স (Black listed persons) ওয়েটিং রুম। এখানে ভিভিআইপি, ভিআইপি, সিআইপি রুম আছে। কিন্তু আজকের ভিআইপি যে আগামীকাল বিএলপি হয়ে যেতে পারেন সেই দূরদর্শিতা আপনার ছিল না। তাই বিএলপি রুম নেই। আজ আমরা সবাই বিএলপি! ব্ল্যাক লিস্টেড পারসন! আমাদের জন্য আলাদা একটা রুম থাকলে কতো ভালো হতো!
এ কে খন্দকার : আমরা যদি দুই কোটি ত্রিশ লক্ষ মানুষের ব্ল্যাক লিস্ট বানাতাম আর তাদের যদি দেশত্যাগে বাধা দিতাম তাহলে এই এয়ারপোর্টের কোনো রুমে কি তাদের জায়গা দিতে পারতাম? দেশের বিশাল জায়গা জুড়েই বিএলপি রুম বানাতে হতো। সেটা কি সম্ভব হতো? তাছাড়া ক্ষমতায় যাবার পর থেকে আমাদের প্রতি ভোটারদের সমর্থন কমছিল। সেপ্টেম্বর ২০১০-এ ডেইলি স্টারে প্রকাশিত জনমত জরিপে সেটাই বলা হয়েছিল। তার পরের সোয়া তিন বছরে আওয়ামী লীগের প্রতি জনসমর্থন আরো কমেছিল। বিএনপির প্রতি জনসমর্থন বেড়েছিল। সেক্ষেত্রে দেশের প্রায় অর্ধেক জায়গা জুড়ে বিএলপি রুম বানাতে হতো। বিদেশিরা তখন বলতো আমরা অর্ধেক দেশকে জেলখানা করেছি। সেটা কি ভালো হতো? ওই যে! ইমিগ্রেশন অফিসার আবার আসছেন। তবে তার হাতে আমাদের পাসপোর্ট নেই।
ইমিগ্রেশন অফিসার : কিছু মনে করবেন না। কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিলে বাধিত হবো। আপনারা সবাই যাচ্ছেন কোথায়?
ডা. দীপু মনি : নিউ ইয়র্কে।
ইমিগ্রেশন অফিসার : কেন?
ডা. দীপু মনি : এবিসি কনভেনশনে যোগ দিতে। এবিসি মানে আমেরিকা-বাংলাদেশ-কানাডা কনভেনশন।
ইমিগ্রেশন অফিসার : আপনি সেখানে কি করবেন?
ডা. দীপু মনি : ‘গণতন্ত্রের উন্নয়নে একদলীয় শাসনের অপরিহার্যতা’ শীর্ষক একটি কি-নোট স্পিচ দেয়ার জন্য আমাকে বলা হয়েছে।
ইমিগ্রেশন অফিসার (ডা. দীপু মনির স্বামীর দিকে ইঙ্গিত করে) : আর উনি?
ডা. দীপু মনি : উনি খুব ভালো বাশি বাজান। আজ প্রায় পঞ্চাশ বছর যাবৎ উনি বাশি বাজাচ্ছেন। এর আগে নিজের বাড়িতে কিছু বিশিষ্ট অতিথিদের সামনে বাশি বাজিয়ে শুনিয়েছেন। এই প্রথম তিনি পাবলিক ফাংশনে, নিউ ইয়র্কের এবিসি কনভেনশনে, বাশি বাজাবেন।
ইমিগ্রেশন অফিসার : আর স্যার, আপনি যাচ্ছেন কেন?
এ কে খন্দকার : আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমি ওই কনভেনশনে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে সত্য ইতিহাস বলার আমন্ত্রণ পেয়েছি। সেটা বলতেই যাচ্ছি।
ইমিগ্রেশন অফিসার (উৎসাহিত স্বরে) : খুব ভালো কথা স্যার। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমরা খুব ছোট ছিলাম। কোন মুক্তিযোদ্ধা তখন কি করেছিলেন আমরা এই প্রজন্ম সে বিষয়ে সত্য কথাটা জানতে পারছি না। আপনারা যখন গত পাচ বছর ক্ষমতায় ছিলেন তখন জেনেছিলাম, বঙ্গবন্ধু নয় মাস পশ্চিম পাকিস্তানে বন্দি ছিলেন। সেজন্য তিনি পরবর্তী সময়ে নন্দিত হয়েছিলেন, যদিও তিনি মুক্তিযুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। আর উল্টো দিকে জিয়াউর রহমান নয় মাস বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের চর হিসাবে। সে জন্য তিনি আপনাদের সময়ে গত পাচ বছরে নিন্দিত হয়েছিলেন। এবার আপনি সাহস করে সত্যটা বলবেন কি?
এ কে খন্দকার (প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে) : আমার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। আসলে আমি এবিসি কনভেনশনে যাবার সুযোগটা নিচ্ছি নিউ ইয়র্কে একটা মেডিকাল চেকআপ করাতে।
ইমিগ্রেশন অফিসার : থ্যাংক ইউ ম্যাডাম। থ্যাংক ইউ স্যার। আপনারা দয়া করে আরেকটু অপেক্ষা করুন। বোঝেনই তো সবই ওপরের নির্দেশ।
এ কে খন্দকার (বিরক্ত মুখে) : ওপরের নির্দেশ! আপনার ওপরওয়ালা। তার ওপরওয়ালা। তার ওপরওয়ালা। তারপর স্বরাষ্ট্র সচিব। তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। তারপর প্রধানমন্ত্রী। সেই তো? এই তো চূড়ান্ত ওপরওয়ালা?
ইমিগ্রেশন অফিসার : আমি ছোট মানুষ। আমি সব জানি না। আপনি যা বললেন, তা হতে পারে। আপনাদের মতো ভিআইপিদের আসা-যাওয়ার সময়ে আমাদের অ্যালার্ট থাকার নির্দেশ দেয়া আছে। আমরা অ্যালার্ট থাকি। তারপর রিপোর্ট করি। এটুকুই আমাদের কাজ। ওপরে যারা আছেন তারাই ডিসিশন নেন। আমাদের কিছুই করার নেই। এটা নিশ্চয়ই আপনারা ভালো বোঝেন। আপনারা তো ক্ষমতায় ছিলেন এই সেদিন পর্যন্ত।
এ কে খন্দকার (বিষন্ন মুখে) : হ্যা। আর কতোক্ষণ লাগবে মনে হয় আপনার? এগারোটা তো প্রায় বাজতে চললো।
ইমিগ্রেশন অফিসার : উই আর ট্রাইয়িং আওয়ার বেস্ট। প্লিজ, আরেকটু ওয়েইট করুন।
ইমিগ্রেশন অফিসার গটগট করে হেটে অদৃশ্য হয়ে গেলেন।
দৃশ্য : ৪
প্রধানমন্ত্রীর অফিস
প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া : এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন কনট্রোল তিনজনকে আটকে রেখেছে। ডা. দীপু মনি ও তার স্বামী এবং এ কে খন্দকারকে। ওরা জানিয়েছে আরো তিনজনকে আটকাতে যাচ্ছে। রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি নসরুল হামিদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ এবং কবি মহাদেব সাহাকে। এসব কেন হচ্ছে ওখানে?
মন্ত্রী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী : ম্যাডাম, আমি সঠিক জানি না কেন হচ্ছে। গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায়ই নতুন নতুন ব্ল্যাক লিস্ট তৈরি করা হতো। সেই ব্ল্যাক লিস্টে যাদের নাম থাকতো তাদের বিদেশ যেতে দেয়া হতো না।
প্রধানমন্ত্রী খালেদা : আমি জানি। ওদের আগে আমরা যখন পাওয়ারে ছিলাম তখন কি হয়েছিল?
সাকা চৌধুরী : ও রকম কোনো লিস্ট ছিল না। তবে আমাদের গত আমলে বড় জোর দশজনকে বিদেশে যেতে বাধা দেয়া হয়েছিল।
খালেদা : আওয়ামী লীগের আমলে কাদের যেতে বাধা দিয়ে লিস্ট বেরিয়েছিল?
সাকাচৌ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০-এর একটি লিস্টের নামগুলো আপনাকে পড়ে শোনাচ্ছি :
বিএনপি নেতাদের মধ্যে এই লিস্টে ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও বিএনপি উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, ড্যাব মহাসচিব ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ইঞ্জিনিয়ার শাহরীন ইসলাম তুহিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর (তখন কারাবন্দি), সাবেক এমপি নাসিরউদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু (তখন কারাবন্দি), সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, সংরক্ষিত আসনের এমপি সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক।
আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট শেখ আনসার আলী, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন হোসেন, ঢাকা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন আহমেদ অসীম, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।
সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন, সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ও আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান (তখন কারাবন্দি), বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিশিষ্ট সাংবাদিক আতাউস সামাদ, কলামিস্ট ফরহাদ মজহার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ডা. এম মনিরুজ্জামান মিঞা।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন, এনএসআইর সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী (তখন কারাবন্দি), আনসার এবং ডিজিএফআইর সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আমিন, জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহ আমান আল আজমী, এনএসআইর সাবেক ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম (তখন কারাবন্দি), খালেদা জিয়ার ভাই মেজর (অব.) সাঈদ এস্কান্দার, সাবেক মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ডিজিএফআইর সাবেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) চৌধুরী ফজলুল বারী।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে ছিলেন, জামায়াতের ফরেন ফাইনান্স দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত মো. জাকারিয়া, দিগন্ত টিভির মালিক মীর কাসেম আলী, চ্যানেল ওয়ানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, এনটিভির মালিক ও সাবেক এমপি মোসাদ্দেক আলী ফালু এবং চ্যানেল ওয়ানের পরিচালক প্রফেসর মাজেদুল ইসলাম প্রমুখ।
খালেদা (গম্ভীর মুখে) : হ্যা। ওই সময়ে আমাদের পার্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ হলে অথবা পার্টির প্রতি কেউ সহানুভূতিশীল হলে তার এই রকম ব্ল্যাক লিস্টেড হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। এখন বলুন। যে তিন জনকে এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন আটকেছে এবং আরো যে তিনজনকে আটকাতে যাচ্ছে, তাদের বিষয়ে আমাদের কি ডিসিশন নেয়া উচিত?
সাকাচৌ : আওয়ামী লীগের আমলে আমাদের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিয়াজ রহমানকে সস্ত্রীক দুই বার এয়ারপোর্ট থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছিল।
খালেদা : রিয়াজ রহমান ভুল করেছিলেন। তার উচিত ছিল প্রথমবার আটকে যাবার পর হাই কোর্টের রুলিং নিয়ে দ্বিতীয় বার এয়ারপোর্টে যাওয়া। সেটা তিনি করেননি। সাবেক রাষ্ট্রদূত শমসের মবিন চৌধুরী সেটা করেছিলেন। তাই সেপ্টেম্বর ২০১০-এ তিনি ওমরাহ করতে সউদি আরবে যেতে পেরেছিলেন।
সাকাচৌ : হ্যা। ওই সময়ে হাই কোর্টের রুলিং নিয়ে সেকেন্ড অ্যাটেম্পটে বিদেশ যাওয়াটা একটা সিসটেমে পরিণত হয়েছিল। ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন এমপিও তাই করেছিলেন। সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিয়াজ রহমানের মতো নির্বিবাদী ভদ্রলোক ভূ-ভারতে আর একজনও নেই! তাকেও সস্ত্রীক ঝামেলা পোহাতে হয়েছিল। এখন যদি আমরা সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে চাই তাহলে সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে তার স্বামীসহ আটকে দিতে পারি।
খালেদা : আপনি ভূ-ভারতে বললেন! হয়তো ভূ-পাকিস্তানে বলতে চেয়েছিলেন। ওরা তো আপনাকে পাকিস্তানের এজেন্ট বলে!
সাকাচৌ : শহীদ জিয়াকে যখন ওরা পাকিস্তানের চর বলে তখন আমার পাকিস্তানের এজেন্ট হতে কোনো আপত্তি নেই।
খালেদা : সে যাই হোক। এবার বলুন এ কে খন্দকার বিষয়ে। তিনি তো একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
সাকাচৌ : তিনি অবশ্য এরশাদের উপদেষ্টাও ছিলেন। তার নৈতিকতা নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। তবে, তিনি মেডিকাল গ্রাউন্ডে নিউ ইয়র্কে যেতে চাইছেন। এখানে মনে করিয়ে দিতে পারি, শমসের মবিন চৌধুরীও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আমাদের গত আমলের সাবেক তথ্যমন্ত্রী শামসুল ইসলামকেও চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যেতে বাধা দেয়া হয়েছিল।
খালেদা : রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি নসরুল হামিদ সম্পর্কে বলুন। তিনি নিউ ইয়র্কে গেলে নিশ্চয়ই হাউজিং সেক্টরে বাংলাদেশের উপকার হবে।
সাকাচৌ : তা হবে। তবে এখানে মনে করা যেতে পারে মাহমুদুর রহমান, যিনি লেখালেখি ও পত্রিকা সম্পাদনা ছাড়াও সিরামিক ইনডাস্টৃর সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত, তাকেও ব্যবসায়িক টৃপে জার্মানিতে যেতে বাধা দিয়েছিল গত আওয়ামী সরকার। তাতে তার ব্যবসার এবং বাংলাদেশেরও বটে, বেশ ক্ষতি হয়েছিল।
খালেদা : কবি নির্মলেন্দু গুণ আর কবি মহাদেব সাহার কথা বলুন। এরা তো রাজনীতির বাইরে।
সাকাচৌ : আওয়ামী লীগের আমলে সেপ্টেম্বর ২০১০-এর ব্ল্যাক লিস্টে দুজন লেখক, আতাউস সামাদ এবং ফরহাদ মজহার-এর নাম ছিল। প্রতিশোধ নিতে চাইলে এখন দুজন কবিকে আটকে দেয়ার যুক্তিটা সঙ্গত মনে হতে পারে।
খালেদা : না। আমি মনে করি যুক্তিটা সঙ্গত হবে না। আমি মনে করি ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আমরা ক্ষমতায় এসেছি মাসখানেক হয়। আমরা কোনো ব্ল্যাক লিস্ট করিনি। করবোও না। আমরা যদি এখন ব্ল্যাক লিস্ট করি তাহলে ভবিষ্যতে ডা. দীপু মনি আর এ কে খন্দকারের মতোই আপনিও বিপদে পড়তে পারেন।
সাকাচৌ : তা ঠিক ম্যাডাম। অবশ্য যদি পাচ বছর পরের নির্বাচনে আমরা হেরে যাই।
খালেদা : এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন কনট্রোল নিজেরা অতি উৎসাহী হয়ে এসব করছে।
সাকাচৌ : ওদের দোষ দেবেন না ম্যাডাম। আওয়ামী আমলে ওরা ব্ল্যাক লিস্ট দেখে কাজ করতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। ওরা মনে করছে আমরাও এখন নতুন একটা লিস্ট পাঠাবো।
খালেদা : না। আমরা কোনো লিস্ট করবো না। ফৃডম অফ মুভমেন্ট বা চলাফেরার স্বাধীনতা মানুষের একটা মৌলিক অধিকার। ওদের সবাইকে ছেড়ে দিতে এবং সসম্মানে প্লেনে উঠিয়ে দিতে বলুন। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। নইলে বাংলাদেশ একইভাবে চলতে থাকবে। সেটা হয় না। এই ভিশাস সার্কল ভাংতে হবে। প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার রাজনীতির চাকা বন্ধ করতে হবে।
সাকাচৌ : আপনি যথার্থই বলেছেন ম্যাডাম। আমি এখনই এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন কনট্রোলে ফোন করে দিচ্ছি।
দৃশ্য : ৫
এয়ারপোর্ট ডিপারচার লাউঞ্জ
ডা. দীপু মনি (রিস্টওয়াচ দেখে হতাশ স্বরে) : প্লেন টেক অফ করার আর মাত্র দশ মিনিট বাকি আছে। আমাদের যাওয়া বোধ হয় আর হলো না।
এ কে খন্দকার : ওই যে! এমিরেটসের ম্যানেজারের সঙ্গে ইমিগ্রেশন অফিসার আসছেন। তার হাতে পাসপোর্ট দেখছি।
ইমিগ্রেশন অফিসার (কাছে এসে) : সরি। অনেক দেরি হয়ে গেল। এই যে আপনাদের পাসপোর্ট। সব পাসপোর্টে ডিপারচার সিল দেয়া হয়েছে। আপনাদের যাত্রা শুভ হোক।
এমিরেটস ম্যানেজার (ব্যগ্র স্বরে) : চলুন সবাই তাড়াতাড়ি।
ডা. দীপু মনি (হাফ ছেড়ে) : চলুন সবাই। (এ কে খন্দকারের প্রতি) ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। বিএনপি আবার ভুল করলো এবং আরো ভুল করবে। এভাবে ওরা ভুল করলে আমরা অবশ্যই আবার ক্ষমতায় ফিরে আসবো। তখন আমাদের আর বিএলপি ওয়েটিং রুমের দরকার হবে না। সুতরাং ওই প্রসঙ্গটা ভুলে যান মি. খন্দকার।
এ কে খন্দকার (স্মিত মুখে) : ঠিকই বলেছেন। হিস্টৃ উইল রিপিট ইটসেলফ। ইতিহাসের চাকা একইভাবে ঘুরবে। আমরা আবার ক্ষমতায় ফিরে আসবো।
তারা তিনজন বোর্ডিং লাউঞ্জের দিকে দ্রুত হাটা শুরু করলেন।
১৮.০৯.২০১০
(সংলাপ, ঘটনা ও চরিত্র সম্পূর্ণ কাল্পনিক।)
(বানানরীতি লেখকের। বি. স.)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন