শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১২

অসাধারণ সংখ্যা বিন্যাসের তারিখ ১১.১১.১১



shafik-rehman2111111111121জার্মান ঔপন্যাসিক এরিক মারিয়া রেমার্কের বিখ্যাত রচনা অল কোয়ায়েট অন দি ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট যারা পড়েছেন তারা জেনেছেন যুদ্ধের ভয়াবহতা। প্রথম মহাযুদ্ধের পটভূমিকায় এই উপন্যাসটি রচিত হয়েছিল। সেই যুদ্ধে প্রায় দেড় কোটি মানুষ নিহত এবং দুই কোটি মানুষ আহত হয়েছিল। এই যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল ২৮ জুলাই ১৯১৪-তে।
১৯১৮তে বছরের এগারতম মাসের এগারতম দিনের এগারতম ঘণ্টায় এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষিত হয়েছিল।
এই ঐতিহাসিক ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে, ফ্রান্সে কোমপেইনি-র কাছে রেঠো বনভূমিতে একটি রেলওয়ে কোচে বিজয়ী মিত্রবাহিনীর পক্ষে আর্মিস্টিস (Armistice) বা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করেন মার্শাল ফার্ডিনান্দ ফক।
আর্মিস্টিস ডে
সেই সময় থেকে ১১ নভেম্বর পরিচিত হয় আর্মিস্টিস ডে, সংক্ষেপে এ-ডে (A day) রূপে। এই দিনটি শান্তি দিবস (Peace Day) নামেও খ্যাত হয়। ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে ১১ নভেম্বর সরকারি ছুটির দিন রূপে ঘোষিত হয়। যুদ্ধে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সারা কনটিনেন্টাল ইওরোপে বছরের এগারতম মাসের এগারতম দিনে সকাল এগারটার সময়ে মানুষ দুই মিনিটের নীরবতা পালন করে। অবশ্য সাম্প্রতিক কালে এই নীরবতা পালনের রেওয়াজ কমে এসেছে। যে রেলওয়ে কোচে আর্মিস্টিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল সেটাকে স্মারক কোচ রূপে সংরক্ষিত করা হয়। এরপর ১৯৩৯-এ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে ২২ জুন ১৯৪০-এ ফ্রান্স বাধ্য হয় জার্মানির সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই করতে। সেই চুক্তিটিও স্বাক্ষরিত হয়েছিল এই একই রেলওয়ে কোচে। চুক্তি স্বাক্ষরের সময়ে এডলফ হিটলার উপস্থিত ছিলেন। ঐতিহাসিক এই রেলওয়ে কোচটি জার্মানিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে যখন জার্মানি পরাজয়ের মুখে চলে যায়, তখন এপৃল ১৯৪৫-এ সেই রেলওয়ে কোচটি ধ্বংস করে দেয় জার্মান সেনাবাহিনী।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শেষ হবার পরে বৃটেনে আর্মিস্টিস ডে নতুন নামে, রিমেমব্রান্স সানডে (Remembrance Sunday বা স্মরণের রবিবার) উদযাপিত হবার রীতি চালু হয়। এটি এখন বৃটেনে পালিত হয় ১১ নভেম্বরের সবচেয়ে কাছে যে রবিবার, সেই দিনটিতে। যেমন, এবার রিমেমব্রান্স সানডে পালিত হবে রবিবার ১৩ নভেম্বর সকাল এগারটায়। ওই দিন বৃটেনের রানী, এলিজাবেথ যাবেন, বাকিংহাম প্যালেসের কাছে হোয়াইটহল নামে একটি চওড়া রাস্তার মাঝখানে নির্মিত একটি সেনোটাফ (Cenotaph বা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ)-এ। ওই স্মৃতিস্তম্ভের পাদদেশে রানী ফুলের মালা রাখবেন। তারপর নীরবতা পালন করবেন। অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা-ও এখন রিমেমব্রান্স ডে পালন করছে।
কেউ কেউ বলেন, বৃটেন আর্মিস্টিস ডে থেকে যে সরে এসেছে তার মূল কারণ হলো, ওই দিন তারা ব্যবসা বাণিজ্য শিল্প বন্ধ রেখে সরকারি ছুটির দিন রূপে ঘোষণা করতে চায়নি। তাই বৃটেন ১১ নভেম্বরের সবচেয়ে কাছের রবিবারে রিমেমব্রান্স সানডে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।
ওদিকে ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা ১১ নভেম্বর পালন করে ভেটারানস ডে (Veterans Day বা যুদ্ধপ্রবীণ দিবস) রূপে। এই দিনে আমেরিকানরা শ্রদ্ধা জানায় তাদের সশস্ত্র বাহিনীর সকল প্রবীণ সদস্যের প্রতি।
লক্ষ্যণীয় যে, প্রথম মহাযুদ্ধ শেষ হবার পর ১৯১৯ থেকে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ ১৯৩৯-এ শুরু হওয়া পর্যন্ত ১১ নভেম্বর আর্মিস্টিস ডে নামে পরিচিত ছিল। এখন সেটা কোনো কোনো দেশে বদলে গিয়েছে। দুই মহাযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত সব দেশই ১১ নভেম্বর উপলক্ষে বিশেষ দিবস পালন করছে।
দুই মহাযুদ্ধে নিহত সাড়ে ছয় কোটি
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে সভিয়েট ইউনিয়নে দুই কোটি এবং চায়নায় এক কোটি নিহত হয়েছিল। অর্থাৎ, দুই মহাযুদ্ধে নিহত হয়েছিল সাড়ে ছয় কোটি মানুষ।
যুদ্ধে নিহতের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করা সবসময়ই একটি কঠিন কাজ। কারণ অনেকে যুদ্ধে আহত হয়ে পরে মারা যায়। অনেকে যুদ্ধের পরে রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায়। অনেকে নিখোঁজ থেকে যায়।
শান্তির বাণী ও পপি ফুল প্রতীক
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরে বিশেষত ইওরোপে শান্তিবাদীরা সোচ্চার হয়ে ওঠেন। বৃটেনের নোবেল বিজয়ী দার্শনিক বারট্রান্ড রাসেল এই শান্তি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। তিনি বিশ্ববাসীকে সতর্ক ও সচেতন করে দেন যে তৃতীয় মহাযুদ্ধ হতে পারে পারমাণবিক মহাযুদ্ধ, যার ফলে এই গ্রহের প্রায় সব মানুষই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।
শান্তির বাণী প্রচারের সাথে সাথে বৃটেন ও কনটিনেন্টাল ইওরোপে ১ নভেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত নারী পুরুষরা তাদের পোশাকে বুকের ওপরে লাল কাগজের পপি ফুল সেফটিপিন দিয়ে পরে থাকেন। ১১ নভেম্বরে বৃটেন থেকে প্রচারিত বিবিসি ওয়ার্ল্ড এবং স্কাই টিভি-র বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের বুকে এই লাল পপি ফুল দেখতে পারেন। এ জন্য এখন আর্মিস্টিস ডে-কে পপি ডে (Poppy Day)-ও বলা হয়। এই ফুল বিক্রির টাকা যায় পঙ্গু যোদ্ধাদের ও তাদের পরিবারের সাহায্যের ফান্ডে।
প্রথম মহাযুদ্ধের পরে ইওরোপে ফ্ল্যানডার্স-এর যুদ্ধক্ষেত্রে যে অসংখ্য পপি ফুল হয়েছিল তারই প্রতীক রূপে কাগজের পপি গৃহীত হয়। ওই যুদ্ধক্ষেত্রে হতাহত সৈনিকদের লাল রক্তের প্রতীক হয় লাল পপি ফুল।
তরুণদের পড়তে হবে
দস্তয়ভস্কির মানবতাবাদী লেখা

১১ নভেম্বর। এই তারিখে জন্মেছিলেন অসাধারণ রাশিয়ান লেখক-ঔপন্যাসিক ফিওডর মিখাইলোভিচ দস্তয়ভস্কি (১৮২১-১৮৮১)। তার জন্ম হয়েছিল মস্কোতে। তার পিতা ছিলেন একজন চিকিৎসক। দস্তয়ভস্কি ছিলেন পিতামাতার দ্বিতীয় পুত্র। ১৬ বছর বয়সে তার মা মারা যান। এর দুই বছর পরে দস্তয়ভস্কির পিতা খুন হন তার ভৃত্যদের হাতে। এই সময় দস্তয়ভস্কি মস্কোতে একটি প্রাইভেট বোর্ডিং স্কুলে থেকে পড়াশোনা করছিলেন। এরপর ১৮৩৮ থেকে ১৮৪৩ পর্যন্ত সেইন্ট পিটার্সবার্গ-এ মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তিনি পড়াশোনা করে গ্র্যাজুয়েট এবং সামরিক অফিসার হন।
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ফিওডর গভীর বেদনা অনুভব করতেন নিম্নবিত্ত ও গরিবদের দুরবস্থা দেখে। পঁচিশ বছর বয়সে তিনি গরিবদের বিষয়ে Bedryc Lyudi বা ইংরেজিতে Poor Folk নামে একটি গল্প প্রকাশ করেন যা তাকে এনে দেয় তাৎক্ষণিক স্বীকৃতি। তিনি জড়িয়ে পড়েন সোশালিস্ট আন্দোলনে। তার লেখনী শক্তিতে ক্ষমতাসীনরা বিপদ বোধ করে। এর তিন বছর পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিচারে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তখন তার বয়স মাত্র আটাশ। করুণা করে তার মৃত্যুদণ্ড বাতিল করা হয়। তাকে সাইবেরিয়াতে নির্বাসনে পাঠানো হয়। ১৮৫৪ পর্যন্ত তিনি ওমস্ক-এ বন্দী ছিলেন। মুক্তির পর জেলের অভিজ্ঞতার ওপরে তিনি বই লেখেন এবং দুই বছর ধরে ইওরোপে ভ্রমণ করেন।
১৮৬৪-তে দস্তয়ভস্কি প্রকাশ করেন নোটস ফ্রম আন্ডারগ্রাউন্ড । এই সময়ে তিনি জুয়ার টেবিলে পরিচিত হন সুসলোভা নামে এক মডেলকন্যার সঙ্গে। দস্তয়ভস্কি আসক্ত হন সুসলোভা ও জুয়া খেলায়। পরবর্তীতে দস্তয়ভস্কির অনেক লেখায় নায়িকার চরিত্র এ মডেলকন্যা সুসলোভার আদলে গঠিত হয়। দস্তয়ভস্কির বহু ধারদেনা হয়ে যায়। তাকে এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করেন অ্যানা গৃগোরিয়েনা স্মিটকিনা নামে আরেক নারী। ১৮৬৭-তে অ্যানাকে বিয়ে করেন দস্তয়ভস্কি। এরপর কয়েক বছর তারা বিদেশে থাকেন। ১৮৭১-এ তিনি রাশিয়াতে ফিরে আসেন। এর দশ বছর পরে দস্তয়ভস্কি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ষাট।
দস্তয়ভস্কি শিল্পবিপ্লব দেখে এক দিকে চমৎকৃত হয়েছিলেন এবং অন্য দিকে তিনি শঙ্কিত হয়েছিলেন। তিনি দেখেছিলেন কীভাবে নারী ও শিশু শ্রমিকরা শোষিত হচ্ছে, গরিবরা মানবেতর জীবন যাপন করছে এবং অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে। দস্তয়ভস্কির লেখালেখিতে সেই সময়ের সমাজের অন্ধকার দিকগুলো ফুটে ওঠে। তার লেখা গভীরভাবে প্রভাবিত করে বিশ্বের অন্যান্য লেখকদের এবং রাশিয়াতে প্রস্তুত করে সামাজিক বিপ্লবের ক্ষেত্র। দস্তয়ভস্কির বিখ্যাত উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট, দি ইডিয়ট এবং ব্রাদার্স কারামাজভ
বিশেষত স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ একটি কৃষিভিত্তিক দেশ থেকে দ্রুত রূপান্তরিত হচ্ছে শিল্প ব্যবসা বাণিজ্যভিত্তিক দেশে। বাংলাদেশের সমাজে ধনী ও গরিবের তফাৎ বাড়ছে। গরিবদের দুঃখ-দুর্দশা বাড়ছে। হত্যা, আত্মহত্যা এবং নানাবিধ অপরাধ বাড়ছে। এই প্রেক্ষিতে আজকের বাংলাদেশের তরুণ লেখকদের জন্য দস্তয়ভস্কি অবশ্যপাঠ্য।
লিওনার্ডো ডি ক্যাপৃও-র জন্ম
১১ নভেম্বরে আরো যেসব বিখ্যাত ব্যক্তি জন্মেছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন আমেরিকান জেনারেল জর্জ প্যাটন (যিনি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে ট্যাংক প্রয়োগে পারদর্শিতা দেখিয়েছিলেন), ফ্রেঞ্চ মুভি ডিরেক্টর রেনে ক্লেয়ার, ফ্রেঞ্চ আর্টিস্ট সেরাট, ফ্রেঞ্চ অভিযাত্রী লুই আন্তন ডি বগেনভিল (যার নামে হয়েছে বগেনভিলিয়া ফুল), এবং আছেন অস্ট্রেলিয়ান কৃকেটার রডনি মার্শ, আমেরিকান মুভি নায়িকা ডেমি মুর ও আমেরিকান মুভি নায়ক টাইটানিক খ্যাত লিওনার্ডো ডি ক্যাপৃও প্রমুখ।
গুরু তেজ বাহাদুর-এর মৃত্যু
১১ নভেম্বরে যারা মারা গিয়েছেন তাদের মধ্যে আমাদের উপমহাদেশে সবচেয়ে বিখ্যাত ছিলেন নবম শিখ গুরু তেজ বাহাদুর (১৬২১-১৬৭৫)। মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব তাকে ইসলাম ধর্ম বরণ করতে আদেশ দিয়েছিলেন। সেই আদেশ অমান্য করায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ১১ নভেম্বর ১৬৭৫-এ দিল্লিতে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তার ছেলে গোবিন্দ সিং আনন্দপুর-এ তার শির ভস্মীভূত করেন। তেজ বাহাদুরের মৃত্যু যেখানে হয় সেই স্থানটিতে একটি গুরুদোয়ারা (শিখদের উপাসনালয়) এবং যেখানে শির ভস্মীভূত হয় সেখানে আরেকটি গুরুদোয়ারা বানানো হয়। তেজ বাহাদুরের মৃত্যুর সময়ে ছেলে গোবিন্দ-র বয়স ছিল মাত্র নয় এবং তিনি হন তার উত্তরাধিকারী।
মৃত্যুঞ্জয়ী চ্যালেঞ্জ
১১ নভেম্বরে জন্ম ও মৃত্যুর পাশাপাশি মৃত্যুকে চ্যালেঞ্জ করে বেঁচে থাকার দুটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে গত শতাব্দীতে। ১৯৮১-তে শিকাগোর ১০০ তলাবিশিষ্ট ভবন জন হ্যানকক সেন্টারের দেয়াল বেয়ে ১১২৭ ফিট ওপরে ওঠেন স্টান্টম্যান ভ্যান গুডউইন। অত্যন্ত বিপজ্জনক এই কৃতিত্বটি তিনি অর্জন করেন মাত্র ছয় ঘণ্টায়। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে উচু ভবনগুলোর মধ্যে পঞ্চম এই ভবনটির ডিজাইনার ছিলেন বাংলাদেশী-আমেরিকান ড. ফজলুর রহমান খান।
লাস ভেগাস-এ ফ্ল্যামিংগো হিলটন হোটেলের দুটি টাওয়ারের মধ্যে দূরত্ব ৬০০ ফিট। ১৯৯৮-এ এই দুই টাওয়ারের এক ছাদ থেকে আরেক ছাদ দড়ির ওপরে হেটে অতিক্রম করেন স্টান্টম্যান জে ককরান। এই স্কাই-ওয়াক (Sky-walk)-এর সময়ে ককরানের চোখ বাধা ছিল!
একশ বছর পর অসাধারণ সংখ্যা বিন্যাস
প্রায় সমতুল্য অন্য কয়েকটি তারিখের চাইতে ১১ নভেম্বর ২০১১ অসাধারণ। ০১.০১.১১-তে দিন ও মাস চিহ্নিত হয়েছে শূন্যের সাহায্যে। এর পরের বছরগুলোতে দিন ও মাসের সংখ্যা ম্যাচ করে না বছরের সংখ্যার সঙ্গে। যেমন ০২.০২.১১, ০৩.০৩.১১, ০৪.০৪.১১ ইত্যাদি। একমাত্র ১১ নভেম্বরে সব সংখ্যা ম্যাচ করে হয় ১১.১১.১১। কিন্তু আগামী বছরে ১১ নভেম্বর হবে ১১.১১.১২তে।
অর্থাৎ, ১১.১১.১১ এই সংখ্যা বিন্যাসটি শুধু প্রতি একশ বছর পরে সম্ভব।
অসাধারণ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন দূরদর্শী। একশ বছর পরের পাঠকের উদ্দেশে তিনি লিখে যান ১৪০০ সাল শিরোনামে কবিতা যার প্রথম কয়েকটি লাইন :
আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি
কৌতূহলভরে,
আজি হতে শতবর্ষ পরে।

আমি একজন সাধারণ লেখক।
রবি ঠাকুরের অনুসরণে আমিও একশ বছর পরে গুটি দিয়ে রাখলাম। আশা করছি ‘আজি হতে শতবর্ষ পরে’ অন্তরীক্ষে আমার এই লেখাটি থাকবে এবং ইন্টারনেটে shafikrehman.com ওয়েবসাইটে পড়বেন কোনো কৌতূহলী পাঠক। জানবেন ১১.১১.১১-র অসাধারণত্ব। তিনি আরো জানবেন, এই অসাধারণ দিনটির সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা আছে। আমার জন্ম হয়েছিল ১৯৩৪-এর ১১ নভেম্বরে।

১১.১১.১১
(বানান রীতি লেখকের নিজস্ব)
শফিক রেহমান : প্রবীণ সাংবাদিক ও জনপ্রিয়  টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন